উন্নত দেশের নারী ৪০ বছর বয়সেও তাদের যৌবন ধরে রাখে: বাঙালী নারীদের কুড়িতেই বুড়ি

বাংলায় একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে “মেয়েরা কুড়িতেই বুড়ি”। বই এর পাতার এই প্রবাদটি অনেকে স্বীকার না করলেও বাস্তবতা কিন্তু এমনই। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে যে বাঙালী নারদের বয়সের তুলনায় বেশী বয়স্ক মনে হয়। যেখানে উন্নত দেশের নারী ৪০ বছর বয়সেও তাদের যৌবন ধরে রাখে। আর আমাদের দেশে বিাহিত ২০ বছরের মেয়েদের মনে হয় অনেক বয়স্ক। কখনও এর কারণ অনুসন্ধান করেছেন কি? এর কারণ লুকিয়ে আছে আমাদেরই কিছু ভুলের মাঝে।
চলুন জেনে নিন কেন বাঙালী নারীদের কুড়িতেই বুড়ি দেখায়….

অল্প বয়সে অধিক সন্তানঃ
আমাদের দেশে খুব অল্প বয়সে বিয়ে এবং বিয়ের পর পড়ি একাধিক সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি এখনো প্রচলিত। প্রথমত, খুব অল্প বয়সে বিয়েটাই নারীর জীবনে হওয়া উচিত নয়। আর বিয়ের পর দ্রুত সন্তানের মা হয়ে যাওয়া বা ঘনঘন সন্তান প্রসব নারীর স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য দুটোই নষ্ট করে ফেলে। সন্তান ধারণ অনেক ধকলের একটি কাজ। অধিক সন্তান হলে তার বিরূপ প্রভাব নারীর দেখে প্রকট হয়ে দেখা দেয়।

আরও পড়ুন: অল্প বয়সে বিয়ে করার সুফল জেনে নিন
আরও পড়ুন: জেনে নিন সহবাসের পর ফরয গোসলে অবহেলার শাস্তি

সন্তান হবার পর নিজের যত্ন না নেয়াঃ
আমাদের দেশের মেয়েদের মাঝে এটি আরও বড় একটি সমস্যা। সন্তান হবার পর খুব সংখ্যক নারীই নিজের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য মেইনটেইন করেন। সন্তান হবার সময় যে বাড়তি ওজন হয়, সেটা ঝরিয়ে ফেলা খুবই জরুরী। নাহলে বাড়তে থাকে আর বাড়তেই থাকে। অন্যদিকে সন্তান হবার সময় ত্বক ও চুলের ক্ষতি হয় অনেকেরই। সন্তানের যত্ন তো করতেই হবে। কিন্তু নিজের সৌন্দর্যের জন্যও সময় বের করতে হবে বৈকি। সুষম আহার, ব্যায়াম ও নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চাই এর সমাধান।

ভুল গহণা নির্বাচনঃ
বিবাহিত নারীদের একটি বড় অংশ আমাদের সমাজে নাকফুল পরিধান করে থাকেন। কিন্তু ভুল নাকফুল নির্বাচনের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নাকফুল বাড়িয়ে তোলে আপনার বয়স। যেমন, যাদের নাক বোঁচা বা একটু মোটা, তারা কখনোই বড় নাকফুল বা নোলক পরিধান করবেন না। নাকফুল যত ছোট হয়, ততই সুন্দর। যাদের নাক খব বেশী চিকন, তাঁরাও বড় নাকফুল পরিহার করুন। যত সিম্পল ডিজাইনের নাকফুল, বয়স দেখাবে ততই কম। যত বড় পরবেন, আপনাকে ততটাই বয়স্ক দেখাবে। নাকে একটু ফুটো আসলেই বাড়তি কয়েক বছর যোগ করে দেয় চেহারায়।

ব্যায়ামে অনিহাঃ
আমাদের দেশের নারীদের মাঝে ব্যায়ামের অভ্যাস খুব কম। কিন্তু আসলে অল্প বয়স হতেই এই অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। ব্যায়াম কেবল দেহের ওজনই ঠিক রাখে না, পাশাপাশি ত্বককে রাখে টানটান ও যৌবনদীপ্ত। শারীরিক ক্ষমতাও রাখে উচ্ছল।

অতিরিক্ত গহনা পরাঃ
গহনা প্রীতি বাঙালি নারীর আছেই। বিয়ের পর এই প্রবণতা আরও বাড়ে। কিন্ত অতিরিক্ত গহনা পরার আগে মনে রাখবেন, যত জবড়জং গহনা পরবেন, আপনাকে ততই বয়স্ক দেখাবে।

ভুল পোশাক নির্বাচনঃ
বিয়ে এবং কয়েকটি সন্তান হয়ে যাওয়ার পর অনেক নারীই আর নিজের পোশাকের দিকে খেয়াল রাখেন না। এটি খুব বড় একটি ভুল। আপনার বয়স যতই হোক না কেন, ওজন যেমনই হোক না কেন, সুন্দরভাবে পোশাক পরলে সবই দৃষ্টিনন্দন মনে হবে। নিজের দেহের সাথে মানানসই কাট ছাঁট ও রঙের পোশাক নির্বাচন করুন। সুন্দর রঙের পোশাক পরিধান করুন। দেখেবন নিজের কাছেও নিজেকে দেখতে ভালো লাগছে।

বাজে হেয়ার স্টাইলঃ
চুলের কাট একজন মানুষের বয়সে বিরাট ভূমিকা রাখে। আপনার সন্তান হয়েছে বলেই নিজের চুলগুলো কোনরকম বেণী বা খোঁপা করে ফেলে রাখবেন, এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন। ভালো পার্লারে গিয়ে সুন্দর একটি মানানসই হেয়ারকাট মেইনটেইন করবেন। চলে খুব বেশী রঙ না করিয়ে ন্যাচারাল রঙের কাছাকাছি শেড ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত রঙ ব্যবহারেও বয়স্ক দেখায়।

আরও পড়ুন: বাঙ্গালী নারীরা শয্যায় অতৃপ্ত কেন জানেন কি?
আরও পড়ুন: কুমারিত্ব সম্পর্কে কয়েকটি অদ্ভূত তথ্য জেনে নিন

প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদানের অভাবঃ
নিজের খাওয়ার দাওয়ার দিকে নজর খুব কম বাঙালি নারীই দিয়ে থাকেন। সঠিক পুষ্টির অভাবে কেবল আপনার সৌন্দর্যই হারিয়ে যায় না, প্রভাব পড়ে আপনার স্বাস্থ্যেও। তাই নিজের জন্য একটি ব্যালান্সড খাদ্য তালিকা মেইনটেইন করা সব মেয়ের জন্য দরকার।

বয়স শরীরে নয়, বয়স নিজের মনে। নিজের মনের মত করে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন, নিজেকে যত করুন, নিজের খেয়াল রাখুন। বয়সের আগেই বয়স্ক দেখানোর সমস্যা আর থাকবে না জীবনে।